ব্রেকিংঃ নবীন-প্রবীণ সম্মলিত ২০০ আসনের তালিকা প্রকাশ বিএনপির
দলের নবীণ-প্রবীণের সমন্বয়ে প্রাথমিকভাবে প্রায় ২শ আসনে একক প্রার্থীর তালিকা করছে বিএনপি। এই তালিকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক থাকছে নারী প্রার্থী। একক প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে জনপ্রিয়তা, ভাবমূর্তি, সাংগঠনিক দক্ষতা, বিগত আন্দোলনে ভূমিকা ও শারীরিক সক্ষমতা।
চলতি মাসের মাঝামাঝিতে তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের কাছে এই বার্তা দেওয়া হবে। প্রাথমিক প্রার্থীর তালিকায় দলের মহাসচিব, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যানসহ জনপ্রিয় নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, কোনো রাজনীতি প্রবীণ-নবীনের সংমিশ্রণ ছাড়া চলে না। এখানে নবীন এবং প্রবীণের সংমিশ্রণে প্রার্থী দেওয়া হবে। জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এবং ভোট টানতে পারবেন- তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের অধীনে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে দেশে তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ও তার মিত্ররা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেয় দলটি। গুরুত্বপূর্ণ নেতারা বলেন, এসব নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কী ভূমিকা ছিল তা-ও দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একক প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টিতে আসনভিত্তিক ঐক্য গড়তে তফসিল ঘোষণার আগে এই তালিকা করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়ন বোর্ড তিনশ আসনে প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করবে। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক তালিকার কোনো প্রার্থী যদি এলাকায় আশানুরূপ অবস্থান তৈরি করতে না পারেন অথবা দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কার্যক্রমে অংশ নেন তাহলে সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় পরিবর্তন আনা হতে পারে। তার আগ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট আসনের সকল দলীয় কার্যক্রম সবুজ সংকেত পাওয়া প্রার্থীর চাহিদা অনুযায়ী হবে। এদিকে দলের সবুজ সংকেতের আশায় দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে লবিংয়ের পাশাপাশি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থীরা। প্রবাসী নেতারাও অনেকে দেশে এসে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দলের হাইকমান্ড সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে দুইশ আসনে প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেখানে ২০১৮ সালের নির্বাচনে যারা দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন তাদের বড় অংশকে এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে। যেখানে নতুন প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে দল, সেখানে তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে জেন-জির মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ দেশের মোট ভোটারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তরুণ।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ৫০-৬০ জন তরুণ প্রার্থী দেখা যেতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রবীণদের পাশাপাশি সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থীরাও মাঠে নেমেছেন। এবারের দুর্গাপূজায় তারা প্রায় প্রতিটি মন্দিরে গেছেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। পাশাপাশি নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় শোডাউনও করেছেন। এই প্রবণতা বেশি দেখা গেছে সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থীদের মাঝে। একাধিক সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থী জানান, অনেক নির্বাচনী এলাকায় দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলের ভাইস চেয়ারম্যানসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতাই প্রার্থী হিসেবে প্রায় নিশ্চিত। এরপরও তরুণরা নিজের অবস্থান দলের শীর্ষ নেতার কাছে জানান দিতে প্রার্থী হিসেবে এলাকায় প্রচার করছেন। তারা মনে করেন, এর মধ্যদিয়ে ভবিষ্যতে নির্বাচন করার একটা সুযোগ তৈরি হলেও হতে পারে অথবা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবি পেতে তাদের জন্য সুবিধা হবে।
জানা গেছে, দলের সিনিয় নেতা অথবা সাবেক মন্ত্রী-এমপিরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন; কিন্তু তরুণ এবং সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটাদের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা বিভাগে খন্দকার আবু আশফাক ঢাকা-১, ব্যারিস্টার ইরফান আমান ইবনে অমি ঢাকা-২, অ্যাডভোকেট নিপুণ রায়চৌধুরী ঢাকা-৩, ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ ঢাকা-২০, তানভীর আহমেদ রবিন ঢাকা-৪, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ঢাকা-৬, নাসিমা আক্তার কল্পনা, হামিদুর রহমান হামিদ, নেওয়াজ আলী ও ইসহাক সরকার ঢাকা-৭, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম ও শেখ রবিউল আলম ঢাকা-১০, সাইফুল আলম মুরাদ ঢাকা-১২, মামুন হাসান ও শফিকুল ইসলাম মিল্টন ঢাকা-১৫, আমিনুল হক ঢাকা-১৬, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, কফিলউদ্দিন আহমেদ ও মোস্তফা জামান ঢাকা-১৮ আসনে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছেন।
পাশাপাশি এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। একই কার্যক্রম করছেন কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল গাজীপুর-১, এম মঞ্জুরুল করিম রনি গাজীপুর-২, আব্দুস সালাম আজাদ মুন্সীগঞ্জ-২, খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু মানিকগঞ্জ-১, নজরুল ইসলাম আজাদ ও মাহমুদুর রহমান সুমন নারায়ণগঞ্জ-২, আকরামুল হাসান নরসিংদী-৩, আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল নরসিংদী-৪, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল ও ইকবাল হোসেন শ্যামল নরসিংদী-৫, মো. মাইনুল ইসলাম ও ওবায়দুল হক নাসির টাঙ্গাইল-৩, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু টাঙ্গাইল-৫ আসনে। মনোনয়নপ্রত্যাশী সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী চট্টগ্রাম-২, ব্যারিস্টার মীর হেলাল ও ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা চট্টগ্রাম-৫, হুম্মাম কাদের চৌধুরী চট্টগ্রাম-৭, শামসুল আলম চট্টগ্রাম-৯, সাঈদ আল নোমান চট্টগ্রাম-১০, ইসরাফিল খসরু চট্টগ্রাম-১১, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ নোয়াখালী-৫, মাহবুবর রহমান শামীম নোয়াখালী-৬ আসনে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছেন। যুক্তরাজ্য থেকে দেশে এসে ধানের শীষের পক্ষে হুমায়ুন কবির সিলেট-২ আসনে কাজ করছেন। ড. এনামুল হক চৌধুরী ও এমরান আহমদ চৌধুরী সিলেট-৬, শাম্মী আক্তার শিপা হবিগঞ্জ-৪ আসনে কাজ করছেন। রকিবুল ইসলাম বকুল খুলনা-৩, আজিজুল বারী হেলাল খুলনা-৪, সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন খুলনা-৬ আসনে জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম করছেন।
একইভাবে ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বাগেরহাট-৪, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বাগেরহাট-৩, ইব্রাহিম রহমান বাবু ও আসাদুজ্জামান আসাদ ঝিনাইদহ-২, আমিরুজ্জামান খান শিমুল ঝিনাইদহ-৩, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ঝিনাইদহ-৪ ধানের শীষের পক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। মনিরুল ইসলাম নড়াইল-২, মাহমুদ হাসান খান চুয়াডাঙ্গা-২, সাবেরা নাজমুল মুন্নি যশোর-২, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত যশোর-৩, কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ যশোর-৬ আসনে ধানের শীষের পক্ষে নানা প্রচার চালাচ্ছেন। শামা ওবায়েদ ফরিদপুর-২, চৌধুরী নায়ার ইউসুফ, মাহবুবুল হাসান পিংকু ও সৈয়দ মোদাররেছ আলী ফরিদপুর-৩, শহিদুল ইসলাম বাবুল ফরিদপুর-৪, মিল্টন বৈদ্য মাদারীপুর-২, খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক ও আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন মাদারীপুর-৩, মিয়া নুরুদ্দিন অপু শরীয়তপুর-৩, সেলিমুজ্জামান সেলিম গোপালগঞ্জ-১, সরদার মো. নুরুজ্জামান গোপালগঞ্জ-২, এসএম জিলানী গোপালগঞ্জ-৩ আসনে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করছেন। রাজীব আহসান বরিশাল-৪, দুলাল হোসেন ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল বরিশাল-২, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বরিশাল-৫ ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। নুরুল ইসলাম নয়ন ভোলা-৪, মুহাম্মদ মুনির হোসেন পটুয়াখালী-২, হাসান মামুন পটুয়াখালী-৩, এবিএম মোশাররফ হোসেন পটুয়াখালী-৪ আসনে কাজ করছেন। সেলিম ভুঁইয়া কুমিল্লা-২, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, কবীর আহমেদ ভূঁইয়া ও নাজমুল হুদা খন্দকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। একইভাবে শফিকুল হক মিলন ও রায়হানুল আলম রায়হান রাজশাহী-৩, অধ্যাপক কামাল হোসেন রাজশাহী-৪, মাহমুদা হাবীবা, আবু বকর সিদ্দিক ও গোলাম মোস্তফা রাজশাহী-৫, আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল রাজশাহী-৬, ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।
আমিরুল ইসলাম খান আলীম সিরাজগঞ্জ-৫, গোলাম সারওয়ার সিরাজগঞ্জ-৬, তাইফুল ইসলাম টিপু, ডা. ইয়াসির আরাফাত রাজন ও ফারজানা শারমিন পুতুল নাটোর-১, ফজলুর রহমান খোকন বগুড়া-৫, কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন পাবনা-৩ আসনে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন। সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ময়মনসিংহ-১, মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বাচ্চু ময়মনসিংহ-১০ আসনে প্রচার চালাচ্ছেন। ব্যারিস্টার সালিমা বেগম আরুণি জামালপুর-৪, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল জামালপুর-৩, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল নেত্রকোনা-১ আসনে ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। মাহফুজ উন নবী ডন ও অ্যাডভোকেট গোলাম রসুল বকুল রংপুর-২, মির্জা ফয়সাল আমিন ঠাকুরগাঁও-২, বেবী নাজনীন নীলফামারী-৪, মমতাজ বেগম লিপি কুড়িগ্রাম-৪, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম গাইবান্ধা-৪, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির পঞ্চগড়-১ ও ফরহাদ হোসেন আজাদ পঞ্চগড়-২ ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।
Comments
Post a Comment