লেখাটা পড়ার সময় হাতের কাছে টিস্যু রাখবেন প্লিজ

  ছেলে মাকে বলছে, মা একটা কথা বলি, আমার একটা অনুরোধ রাখবে?




তুই চাইলে আমি কি না করতে পারি? বল্ তোর সব কথা আমি রাখবো।

তোমার বৌ'মা বলছিল তোমার বয়স হয়েছে। এখন তো তোমার শরীরের একটু বিশ্রাম প্রয়োজন। আর এই বাড়িটা তো খুব একটা ভালো না। ছোট ঘুপচি! তোমার কাশিটাও বেড়ে গেছে। আর ডায়াবেটিস তো আছেই, হার্টের সমস্যা, হাড়ের সমস্যা..... আরো কতো কি!"

হ্যাঁ রে, মনে হয় আর বেশিদিন....!

আহ্ থামো তো মা। তোমার সব সময় দেখা শোনার জন্য কাউকে রাখতে হবে।

আচ্ছা আমাকে তাহলে গ্রামের বাড়িতে...।

না না ওই যে বৃদ্ধাশ্রমের স্পেশাল ব্র্যাঞ্চে ভর্তি করালে কেমন হয়? এটাই বলছিল তোমার বৌ'মা। ওখানে অনেকে থাকবে তোমার মতোই। তাদের সাথে গল্প করতে পারবে আর এ বাড়িতে তো কেউই নেই, আমি ব্যবসায় দৌড়াচ্ছি, তোমার বৌ'মা অফিসে আর মিঠু তো সারাদিনই স্কুলে।ওখানে তুমি আরামেই থাকবে মা। এটাই আমার, মানে আমাদের অনুরোধ ছিল।

আচ্ছা তুই চাইলে তাই হবে।

থ্যাংকস মা......।

আচ্ছা কালকে বিকেলেই কিন্তু তাহলে ওখানে যাচ্ছো। তোমার ব্যাগ গুছিয়ে রাখবে।

পরের দিন, অস্বস্তিকর জ্যামে আটকে আছে মা-ছেলে। নীরবতা ভাঙলেন মা.......!

বাবা ওখানে আমাকে দেখতে যাবি তো? পারলে একটা ফোন কিনে দিস আমাকে।

--- মা তুমি ফোন দিয়ে কি করবে? ওখানে ফোন আছে তো।

কিছুক্ষন পরে একটা বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামালো। বেশ কিছুক্ষণ নিরব থেকে এবার ছেলে বলে উঠলো।

-নামো মা, এটাই তো ওই বৃদ্ধাশ্রম। বলেছিলাম না তোমার পছন্দ হবে। তোমার জন্য দোতালার দক্ষিণের ঘরটা বুকিং দিয়ে রেখেছি।

টিং ডং টিং ডং (দরজা খুললো)

- হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ ! হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ 'মা' ! !

দরজা খুলতেই চমকে গেলেন মা। আরে ওই তো তার একমাত্র নাতি আর বৌ'মা কেক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এতো বেলুন আগে কখনো দেখেননি। এতো আয়োজন করে কখনো কেউ তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানায় নি। আরে, ওই তো তার দুই মেয়ে আর তাদের জামাই দাঁড়িয়ে।ওদেরও ডেকে এনেছে তার পাগল ছেলেটা।

হ্যাপি বার্থ ডে মা।

--- তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস (মা কান্না ভেজা কন্ঠে)। কিন্তু, এটা কার ঘর?

--- বাড়ির ফলকে নাম দেখোনি! বাবার নামে রেখেছি। মা পুরো বাড়িটাই আমাদের। এবার তুমি আরামে থাকতে পারবে মা।

--- তুই না ! এমন কি কেউ করে? (কান্না ভেজা চোখে জোরে জোরে মাথা নাড়ছেন। আনন্দে কথা বলতে পারছেন না)

আয়োজন শেষে ঘুমাতে যাবে এমন সময় পেছন থেকে মায়ের ডাক। হাতের ব্যাগটা আতিপাতি খুঁজে একটা কৌটা বের করে ছেলের হাতে ধরিয়ে দিলেন।

--- নে এটার আর দরকার হবে না। (ইঁদুর বি*ষ)

চিন্তা করেছিলাম যদি বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসিস তাহলে সেদিনই খেয়ে নেবো।

--- ধুর মা কি যে বলো ! এটাই তো আমি কাল রাতেই পাল্টে তোমার ক্যালসিয়ামের ওষুধ ভরে রেখেছি। তুমি ঘুমাও।

মার আজ আর কিছুই চাওয়ার নেই। আর কিছু না হোক তার ছেলেকে অন্তত মানুষ করতে পেরেছে সে। যাক আজকের ঘুমটা সত্যিই আরামের হবে, ঘুমের ঔষুধ খেতে হবে না।

প্রত্যেক সন্তানই যেন মা-বাবাকে এভাবেই ভালোবাসে এবং মা-বাবার শেষ বয়সে যেন তাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠায়।💚
শুভরাত্রি ❤️💚 
See less

Comments

Popular posts from this blog

জমি খারিজ করেনি যারা, তাদের জন্য বড় তিন সুখবর!

W পজিশনে বাচ্চাকে বসতে দেখলে সাথে সাথে থামাবেন

দাঁ’তের গর্ত কেন হয়, আর গর্ত হলে আপনি কী করবেন জেনে নিন