বিনা খরচে শ্রমিক যাবে মালয়েশিয়ায়,যেভাবে যেতে হবে জেনে নিন

 বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাবে জিরো কস্ট বা শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে। শ্রমিক যাওয়ার সব ব্যয় বহন করবে ওই দেশটির নিয়োগকর্তা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বন্ধুরাষ্ট্র মালয়েশিয়া সফর শেষে এরকম ইঙ্গিত দিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা।



এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার আইন মেনে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নেওয়ার একটি মডিউলও দাঁড় করানো হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ইউনিভার্সেল রিক্রুটমেন্ট প্রসেস (ইউআরপি)। এর মাধ্যমে পরিচালিত ডাইরেক্ট লেবার রিক্রুটমেন্ট (ডিএলআর) প্ল্যাটফর্ম। ইউআরপি ও ডিএলআর দুটিই পরিচালিত হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) মাধ্যমে। বাংলাদেশসহ ১৪টি সোর্স কান্ট্রি থেকে এ পদ্ধতিতে লোক নেবে মালয়েশিয়া। এ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের কারসাজি বা সিন্ডিকেট তৈরির সুযোগ থাকবে না। এরই মধ্যে মালয়েশিয়া সরকার মডিউলটি অনুমোদন করেছে। বাংলাদেশ সরকারেরও সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক সম্মতি পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, শিগগির ইউআরপি ও ডিএলআর বাস্তবায়ন হবে এবং বাংলাদেশ থেকে প্রায় শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে শ্রমিক যাবে মালয়েশিয়ায়।


জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় বর্তমানে ১৪টি সোর্স কান্ট্রি থেকে শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। বিদেশি শ্রমিকের নিয়োগ, ভিসা, মেডিকেল, ইমিগ্রেশন, নিরাপদ কর্মসংস্থানসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয় ফরেন ওয়ার্কার সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এফডব্লিউসিএমএস) মাধ্যমে।


এ সফটওয়্যারটি বিদেশি শ্রমিকদের তথ্য নিবন্ধন, ভিসা আবেদন ও অনুমোদন, মেডিকেল চেকআপ রিপোর্ট সংরক্ষণ, ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত কার্যক্রম, নিয়োগকর্তা ও শ্রমিকের তথ্য সংরক্ষণ এবং সমন্বয় করে থাকে। এফডব্লিউসিএমএস নিয়ন্ত্রণ করে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট অব মালয়েশিয়া। এফডব্লিউসিএমএস নামক ডিজিটাল সিস্টেম তৈরি, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান বেস্টিনেট এসএনডি.বিএইচডি। এ বেস্টিনেটের প্রতিষ্ঠাতা ও গ্রুপ প্রেসিডেন্ট দাতোশ্রী মো. আমিন বিন আব্দুল নূর। তিনি শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির ইউআরপি ও ডিএলআর মডিউল তৈরি করেছেন। এ সফটওয়্যারগুলো বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন পেলে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ায় আলাদা অফিস স্থাপন করবে।


পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরে ইউআরপি অফিস স্থাপন করা হবে। ইউআরপির থাকবে এআই চালিত বিশেষ অ্যাপস। ইউআরপি ও ডিএলআরের মাধ্যমে পরিচালিত হবে সরাসরি শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া। এআই চালিত এসব মাধ্যমে অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশের যে কোনো শ্রমিক সম্পূর্ণ বিনা খরচে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। তার যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তা উড়োজাহাজ ভাড়া, মেডিকেল চেকআপ করানো থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করবে। শ্রমিক শূন্য খরচে মালয়েশিয়া পৌঁছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দেওয়ার পর সার্ভিস চার্জ হিসেবে প্রথম মাসের বেতন কেটে নিতে পারবে ইউআরপি। মন্ত্রণালয়ের নিয়োগানুমতি, বিএমইটির ছাড়পত্রসহ যাবতীয় কাজ করবে সীমিতসংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি। সার্ভিস চার্জের একটি অংশ তারা পাবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যয়ও দেওয়া হবে সার্ভিস চার্জ থেকে। ফলে প্রায় শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকরা মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পাবেন।


আরও পড়ুনঃ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য আসছে নতুন সুখবর

সংশ্লিষ্টরা বলেন, বাংলাদেশ থেকে যে প্রক্রিয়ায় শ্রমিক নেওয়া হয়, তা দুঃখজনকভাবে আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের লঙ্ঘন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘ন্যায্য সাধারণ নীতি ও কর্মপরিচালনা নির্দেশনা’র মূল নীতি হলো ‘নিয়োগকর্তাই সব ব্যয় বহন করবে’। অর্থাৎ, শ্রমিকের পাসপোর্ট করা থেকে শুরু করে ভিসা ফি, মেডিকেল চেকআপ, উড়োজাহাজের টিকিটসহ যাবতীয় খরচ নিয়োগকর্তাকে বহন করতে হবে। শ্রমিকের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো খরচ আদায় করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।


মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা জানান, ডাইরেক্ট লেবার রিক্রুটমেন্ট বা ডিএলআর প্ল্যাটফর্ম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এআই দ্বারা পরিচালিত ডিজিটাল সিস্টেম যা মধ্যস্বত্বভোগী এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের শোষণ সম্পূর্ণরূপে দূর করবে। এটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা আইএলওর শ্রমিক নিয়োগ নীতিমালা অনুসরণ করে তৈরি, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সম্মতিপূর্ণ একটি স্বচ্ছ এবং নীতিগত নিয়োগ নিশ্চিত করবে। এআই চালিত ডিএলআরের মূল বিষয়গুলো হচ্ছে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে শূন্য অভিবাসন ব্যয় নিশ্চিত করা। এটি বাস্তবায়িত হলে শ্রমিকদের নিয়োগ ফি দিতে হবে না। বর্তমানে একজন শ্রমিক ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার মার্কিন ডলার বা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করে থাকেন। এ প্রক্রিয়ায় নিয়োগের সমুদয় ব্যয় নিয়োগকর্তা বহন করবে। যার মধ্যে উড়োজাহাজ ভাড়া, ভিসা, চিকিৎসা, বীমা, প্রশিক্ষণ এবং সরকারি বিভিন্ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে। নিয়োগকর্তা এবং কর্মীরা ডিএলআর প্ল্যাটফর্মের অধীনে এআই প্রযুক্তিতে ভাষাগত অনুবাদ সিস্টেমের মাধ্যমে সরাসরি নিজস্ব ভাষায় যোগাযোগ করতে পারবেন। একটি কাজের বিভিন্ন শর্ত, চুক্তি ও সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হবে না।


এ প্রক্রিয়ায় কোনো মধ্যস্থতাকারী বা দালালের স্থান থাকবে না। লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো শুধু আইনি ও প্রশাসনিক বিষয়গুলো দেখবে। এতে এজেন্সি ও শ্রমিকের মধ্যে অবৈধ মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন হবে না। ডিএলআর প্রক্রিয়া সরাসরি দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং শ্রমিক শোষণ কমিয়ে আনবে। ডিএলআর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (বিটিইবি) এবং কাঙ্ক্ষিত দেশের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ প্রশিক্ষণ পরিচালনা করবে। ডিএলআর স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাকরি প্রার্থীদের যোগ্যতা ও দক্ষতা আছে কি না, সেটা নিশ্চিত করবে। এ প্রক্রিয়ার আরও একটি সুবিধা হচ্ছে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে এবং দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। অভিবাসন ব্যয় কমানোর পাশাপাশি শ্রমিকরা আরও বেশি অর্থ পাঠাতে পারবে। এ স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুধু মালয়েশিয়া নয়, বিশ্বব্যাপী দক্ষ শ্রমিকদের জন্য একটি বিশ্বস্ত সোর্স কান্ট্রি হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করবে।


সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটির) প্রচলিত প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। এটি নিরাপদ এবং যাচাইকৃত নিয়োগের জন্য শ্রমিক নিয়োগকারী দেশগুলোর নিয়োগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবে।


আরও পড়ুনঃ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়ের ধারণা দিলেন সিইসি

সংশ্লিষ্টরা বলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে জেরবার অবস্থা। ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে নিজেদের মধ্যে কয়েকটি মামলা করেছে তারা। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলা করা হয়। ঢালাও মামলার ফলে ‘আন্তর্জাতিক মানব পাচার সূচকে (টিআইপি) ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মালয়েশিয়া। টিআইপি র্যাঙ্কে মালয়েশিয়া বর্তমান টায়ার-২ ক্যাটাগরিতে রয়েছে, যা একেবারে তলানিতে বলা যায়। অপ্রমাণিত অভিযোগ তদন্ত থেকে বাদ দেওয়া বা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য মালয়েশিয়ার সরকার বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়েছে। যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির সভায়ও বিষয়গুলো নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। পর্যালোচনা শেষে বাংলাদেশ সরকার এসব অপ্রমাণিত অভিযোগ ও মামলার তদন্ত এবং অনুসন্ধান প্রত্যাহার করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু সেটা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।


এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘কোনো শ্রমিক মানব পাচার বা অর্থ পাচারের মামলা করেনি। ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যে ৪ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক মালয়েশিয়া গিয়েছে, তারা সবাই কাজ পেয়েছে। কারও অভিযোগ নেই। তবে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ নিজেদের বঞ্চিত দাবি করে সাজানো অভিযোগে মামলা করেছে। তারা বিভিন্নভাবে মামলার তদন্তকে প্রভাবিত করেছে। ফলে এসব তদন্ত ও অনুসন্ধান মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার অন্তরায় হিসেবে দেখা দিয়েছে।


শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া সম্ভব কি না—জানতে চাইলে বেস্টিনেটের প্রতিষ্ঠাতা দাতোশ্রী মো. আমিন বিন আব্দুল নূর কালবেলাকে বলেন, ‘আমি মালয়েশিয়ার নাগরিক হলেও বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। অবৈধভাবে শ্রমিকরা এসে মালয়েশিয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করে। অনেক শ্রমিক ভিটেমাটি বিক্রি করে মধ্যস্বত্বভোগী বা দালাল চক্রের হাতে টাকা তুলে দেয়। শ্রমিকরা বাংলাদেশের দেশের রিক্রুটিং এজেন্সির সাব এজেন্ট, উপ-এজেন্ট ও গ্রামের এজেন্ট বা দালালের মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে। মধ্যস্বত্বভোগীরা বিপুল অর্থ নেওয়ার কারণে শ্রমিকরা নিঃস্ব হয়ে পড়ে। নানাভাবে তারা প্রতারিত হয়। যখন কাজপ্রত্যাশী শ্রমিক ও নিয়োগকর্তার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে; তখনই এসব দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে। আমাদের কাজ হলো অভিবাসনপ্রত্যাশী শ্রমিক ও নিয়োগকর্তার মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে দেওয়া বা যোগাযোগ স্থাপন করিয়ে দেওয়া। শ্রমিকদের শূন্য খরচে নিরাপদ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা। আমরা দেশের স্বার্থ ও শ্রমিকের স্বার্থ দেখতে চাই।’


তিনি আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর দুই লাখ বা তারও বেশি শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন সেক্টরে অদক্ষ শ্রমিকও পাঠানোর পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। ইউআরপি বাস্তবায়ন করা গেলে শ্রমিকরা শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে নিরাপদ কর্মসংস্থান পাবে। এজন্য আমি বাংলাদেশ সরকারসহ সব পক্ষের সহযোগিতা চাই।’


শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


আরও পড়ুনঃ ‘জুলাই আহতদেরকে দেখতে প্রতি শনিবার সিএমএইচে যান সেনাপ্রধান’: সারজিস আলম

কলিং ভিসায় নেবে সাড়ে ২৪ লাখের বেশি কর্মী: বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে ফের কলিং ভিসার কোটা উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া। কলিং ভিসায় দেশটি সাড়ে ২৪ লাখের বেশি কর্মী নেবে বলে জানা গেছে। গতকাল এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসিউশন ইসমাইল। মালয়েশিয়ার প্রধান প্রধান গণমাধ্যম এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দীর্ঘ চার বছরের নিষেধাজ্ঞার পর ২০২২ সালের ৯ আগস্ট মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলেও এর সাত মাস পর ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ দেশটির তৎকালীন মানবসম্পদমন্ত্রী ভি শিবকুমার এক বিবৃতিতে জানান, বিদেশি কর্মীদের জন্য কোটার আবেদন ও অনুমোদন পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। প্রায় দুই বছর পর গতকাল বিদেশি কর্মী নিয়োগ বিষয়ে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি যৌথ কমিটির সভা হয়। ওই সভায় কলিং ভিসার কোটা উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসিউশন ইসমাইল জানান, কৃষি, বাগান ও খনি খাতসহ মোট ১৩টি উপখাতে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের আবেদন গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে সার্ভিস সেক্টরের হোলসেল অ্যান্ড রিটেল, ল্যান্ড ওয়্যার হাউস, সিকিউরিটি গার্ডস, মেটাল অ্যান্ড স্ক্রাপ ম্যাটেরিয়ালস, রেস্তোরাঁ, লন্ড্রি, কার্গো এবং বিল্ডিং ক্লিনিং খাতে শ্রমিক নিয়োগের সুযোগ থাকছে।


তিনি আরও বলেন, নির্মাণ খাত অর্থাৎ কনস্ট্রাকশন সেক্টরে নিয়োগ কেবল সরকারি প্রকল্পে সীমাবদ্ধ থাকবে, আর উৎপাদন (ম্যানুফ্যাক্টর) খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে মালয়েশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এমআইডিএ) আওতাধীন নতুন বিনিয়োগকে।


এবারের কলিং ভিসা/বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের আবেদনের সুযোগ শুধু খাতভিত্তিক অফিসিয়াল এজেন্সিগুলো পাবে। আগের মতো কোনো এজেন্ট বা সরাসরি নিয়োগকর্তা স্বাধীনভাবে আবেদন করতে পারবে না। আবেদন যাচাইবাছাই শেষে তা অনুমোদন করবে ফরেন ওয়ার্কার্স টেকনিকাল কমিটি এবং পরে জয়েন্ট (যৌথ) কমিটি।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, এখন ২৪ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫৬ জন শ্রমিকের কোটা চালু আছে, যা বছর শেষ (৩১ ডিসেম্বর-২০২৫) পর্যন্ত বহাল থাকবে। এরপর বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ সীমিত করে কেবল দেশের মোট জন শক্তির ১০% পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হবে। তবে এ কোটায় বাংলাদেশিরা কতজন আবেদন করতে পারবে তা জানায়নি দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।


মধ্যস্বত্বভোগীরা বিপুল অর্থ নেওয়ার কারণে শ্রমিকরা নিঃস্ব হয়ে পড়ে। যখন কাজপ্রত্যাশী শ্রমিক ও নিয়োগকর্তার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে; তখনই দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ২ লাখ বা তারও বেশি শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। ইউআরপি বাস্তবায়ন করা গেলে শ্রমিকরা শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে নিরাপদ কর্মসংস্থান পাবে। এজন্য বাংলাদেশ সরকারসহ সব পক্ষের সহযোগিতা চাই মো. আমিন বিন আব্দুল নূর বেস্টিনেটের প্রতিষ্ঠাতা

Comments

Popular posts from this blog

জমি খারিজ করেনি যারা, তাদের জন্য বড় তিন সুখবর!

W পজিশনে বাচ্চাকে বসতে দেখলে সাথে সাথে থামাবেন

দাঁ’তের গর্ত কেন হয়, আর গর্ত হলে আপনি কী করবেন জেনে নিন